কাজ করতে পারছি না/ মাথা লক হয়ে আছে?
কাজ করতে পারছি না/ মাথা লক হয়ে আছে?
যেহেতু আমি ক্রিয়েটিভ কাজ করি তাই মাঝে মাঝে আমার মাথা লক হয়ে যাই আই মিন আমি কোন কাজ করতে পারি না বা নতুন আইডিয়া আসে না।
আমি যখন জব করতাম তখন দেখা যেতো হুট হাট মাথা লক হয়ে গেছে মানে নতুন কোন কাজ করতে পারতাম না, মাথা কিলাইলেও আইডিয়া বের হয়তো না। আউটপুট একদম কমে যায়। নিজের মধ্যে হতাশা কাজ করে। কারন ক্রিয়েটিভ কাজ করতে গেলে সব সময় ই ব্রেইনের উপর চাপ পড়ে। সব সময়ই নিত্যনতুন আইডিয়া নিয়ে কাজ করতে হয়।
এই সমস্যা টা শুধু আমার একার না, যারাই ক্রিয়েটিভ কাজ করেন এদের সবার ই হয়তো এমন হয়ে থাকে বা হয়।
তখন কি করতাম বা কি করা উচিত?
হুম যখনি দেখতাম এমন হচ্ছে তখন অফিস থেকে দুই তিন দিনের জন্য ছুটি নিতাম একটু রিফ্রেশমেন্ট এর জন্য। কারন বেষ্ট আউটপুট দেওয়ার জন্য অবশ্যই রিফ্রেশ হতে হয়।
ছুটি নিয়ে হয় গ্রামের বাড়ি বা কোথাও ট্যুরে চলে যেতাম। একদম কাজের বাইরে থাকতাম অই সময় টা । ট্যুর থেকে ফিরে এসে আবার আগের মত কাজে ফিরে যেতাম। এবং আউটপুট বেড়ে যেত।
ঠিক এখনও এমনটাই করি একটানা কাজ করতে বোরিংফিল হলে কোথাও থেকে ঘুরে আসি।
মাথা থেকে জাংক ফাইল গুলা ডিলেট করে দিয়ে আসি।
ক্রিয়েটিভ কাজ করতে হলে অবশ্যই সবার আগে মাথা ঠান্ডা রাখতে হবে। নিজে কে সময় দিতে হবে, পরিবার/ প্রিয়জনের সাথে সময় কাটাতে হবে তাহলেই মনে প্রশান্তি আসবে যেটা ” মেন্টাল হেলথ্ ” প্রতিটি মানুষের সুখী থাকতে হলে সুখে রাখতে হলে তাকে অবশ্যই মেন্টাল হেলথ্ এর দিকে নজর দিতে হবে। অন্যথায় সুখী হতে পারবেন না বা কাজ কর্মে মনোযোগ দিতে পারবেন না।
আমাদের ক্রিয়েটিভ কাজ টা একটু কঠিন কারন কাজের মধ্যে যখন ঢুকে যায় তখন একটানা কাজ করতে করতে মেজাজ একরুখা বা খিটমিটে হয়ে যায়। যেটা নিজের জন্য খুবই ভয়ংকর। এটা আমার উপর ই হয় এর জন্য প্রতি নিয়ত আমি আমার মেন্টাল হেলথ্ এর ট্রিটমেন্ট গ্রহণ করি।
রিফ্রেশমেন্ট হবার জন্য বা সব সময় কুল থাকার জন্য যা যা করা দরকারঃ
১। নিয়মিত ৫ ওয়াক্ত নামাজ পড়া।
২। রাগ, ক্রোধ, হিংসা কে নিয়ন্ত্রণ করা।
৩। অপরাধীদের ক্ষমা করে দেওয়া।
৪। সাপ্তাহিক, মাসিক অন্তত ১ বার হলেও কোথাও ঘুরতে যাওয়া।
৫। পরিবার, প্রিয়জন, বন্ধু বান্ধবদের সাথে সময় কাটানো।
৬। সাক্সেসফুল মানুষদের সাথে কথা বলা। তাদের গল্প শোনা।
৭। নিজের কাজে (একদিক) এ ফোকাস করা, মাল্টিফোকাসড না হওয়া।
৮। একটানা অনেকক্ষন কাজ না করা, মাঝে মাঝে ব্রেক নেওয়া।
৯। ছুটি টা কে প্রপার রিফ্রেশমেন্ট এর কাজে লাগানো, আমরা ছুটি পেলে অন্য কাজে ব্যস্ত হয়ে যায়। এটা না হওয়া। ছুটি মানেই নিজেকে, ফ্যামিলিকে সময় দেওয়া।
১০। সাহায্য করা, দান সদকা করা। এতে মন ভালো থাকবে।
১১। টাইম ম্যানেজমেন্ট করে সব কিছু করা।
১২। লক্ষ্য স্থীর করা ( Goal Setup), প্লান অনুযায়ী কাজ করা।
১৩। ওয়ার্ক আউট, ফিজিক্যাল কোন গেইম ( ক্রিকেট, ফুটবল, ব্যাডমিন্টন ইত্যাদি) খেলুন।
১৪। সবার সাথে ভালো ব্যবহার করুন, হাসি মুখে কথা বলুন।
সব শেষে বলবো, যখন দেখবেন কাজ করতে মন চাচ্ছে না, তখন জোর করে কাজ করতে যাবেন না বরং তখন কিছুক্ষণের জন্য বিরতি নিয়ে পরে আবার কাজে বসতে পারেন। এতে কাজ করতে ও ভালো লাগবে। বেষ্ট আউটপুট দিতে পারবেন।
শরীর, মন এবং ব্রেনের উপর চাপ দিয়ে কোন কিছু না করাই ভালো।
সুস্থ মন, সুস্থ শরীর আপনাকে সাফল্যের পথে একধাপ এগিয়ে নিয়ে যাবে।
সবার সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।
© সাব্বীর আহম্মেদ